দামেস্ক বিমানবন্দরে আন্তর্জাতিক ফ্লাইট পুনরায় চালু
- By Jamini Roy --
- 08 January, 2025
দীর্ঘদিনের যুদ্ধ ও সংঘাতের পর সিরিয়ার পুনর্গঠনের পথে একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক হিসেবে দামেস্ক আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে আন্তর্জাতিক ফ্লাইট পুনরায় শুরু হয়েছে। ২০২৪ সালের ৮ ডিসেম্বর বিদ্রোহী গোষ্ঠী হায়াত তাহরির আল-শাম (এইচটিএস) এবং অন্যান্য বিদ্রোহী সংগঠন রাজধানী দামেস্কের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার পর প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদ দেশ ছেড়ে রাশিয়ায় আশ্রয় নেন। এরপরই সিরিয়ার নতুন সরকার কার্যক্রম শুরু করে।
মঙ্গলবার (৭ জানুয়ারি) স্থানীয় সময়ে সিরিয়ার নতুন সরকারের অধীনে প্রথম আন্তর্জাতিক ফ্লাইট পরিচালিত হয়। সিরিয়ান এয়ারলাইনসের একটি বিমান সংযুক্ত আরব আমিরাতের শারজাহর উদ্দেশ্যে উড্ডয়ন করে। এ ছাড়াও কাতার এয়ারওয়েজ জানিয়েছে, তারা দামেস্ক বিমানবন্দরে প্রতি সপ্তাহে তিনটি ফ্লাইট পরিচালনার পরিকল্পনা করছে।
দামেস্ক বিমানবন্দরের পরিচালক আনিস ফালাও বলেন, “আজ নতুন করে সবকিছু শুরু হলো। আমরা ফ্লাইট আগমন ও বহির্গমন চালু করেছি। এটি সিরিয়ার জন্য একটি ঐতিহাসিক মুহূর্ত।”
সিরিয়ার নতুন সরকার দেশের গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামো পুনর্গঠনের ওপর জোর দিচ্ছে। বিশেষ করে দামেস্ক ও আলেপ্পোর মতো প্রধান বিমানবন্দরগুলোর কার্যক্রম পুনরুদ্ধারে মনোযোগ দিচ্ছে।
তবে সিরিয়া এখনও কঠোর অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞার মুখে রয়েছে, যা তেল ও খাদ্য আমদানিকে জটিল করে তুলেছে। যুক্তরাষ্ট্র সম্প্রতি মানবিক সহায়তা প্রদানের উদ্দেশ্যে কিছু নিষেধাজ্ঞা শিথিল করেছে। যদিও এই পদক্ষেপকে যথেষ্ট বলে মনে করছেন না বিশ্লেষকরা।
সিরিয়া ও ইরাকের মধ্যবর্তী আল কাইম সীমান্ত পয়েন্ট পুনরায় চালুর প্রস্তুতি চলছে। ইরাক সরকার জানিয়েছে, এই সীমান্ত শিগগিরই চালু হবে, যা দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য ও যাত্রী পরিবহন সহজ করবে।
সীমান্ত পুনঃচালুর মাধ্যমে সিরিয়ার নতুন সরকার ও ইরাকের মধ্যে সম্পর্কোন্নয়নের ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে। এদিকে তুরস্ক সিরিয়ার পরিস্থিতি গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছে। তারা বলেছে, প্রয়োজনে সীমান্ত নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে নতুন সামরিক অভিযান চালানোর প্রস্তুতি রয়েছে।
সিরিয়ার পুনর্গঠনের প্রক্রিয়া এখনও প্রাথমিক অবস্থায় রয়েছে। বিমানবন্দর ও সীমান্ত পুনরায় চালু হওয়া আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে ইতিবাচক বার্তা দিলেও দেশটি কঠিন অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করছে।
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, নতুন সরকারের অধীনে এসব উদ্যোগ সিরিয়ার পুনর্গঠনে একটি নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে। তবে আন্তর্জাতিক সহায়তা এবং নিষেধাজ্ঞার শিথিলতা ছাড়া দীর্ঘমেয়াদী স্থিতিশীলতা অর্জন কঠিন হতে পারে।